Friday, 25 October 2024

বুঝে পড়ি লিখতে শিখি ( ১ম পরিচ্ছেদঃ রোজনামচা)

  বুঝে পড়ি লিখতে শিখি ( ১ম পরিচ্ছেদঃ রোজনামচা)

ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষা ২০২৫-এ বাংলা সাহিত্য অংশে “একাত্তরের দিনগুলি” রোজনামচাটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে, কারণ এটি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ধারাবাহিক বর্ণনার মাধ্যমে তুলে ধরে। এই অধ্যায়টি শিক্ষার্থীদের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট বুঝতে সহায়তা করে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রতি সচেতনতা বৃদ্ধি করে, যা তাদের সাহিত্য এবং অনুধাবনমূলক দক্ষতা পরীক্ষায় কাজে লাগবে।

এই রোজনামচা আকারে লেখা অংশটি শিক্ষার্থীদের দেখায় কীভাবে একটি নির্দিষ্ট ঘটনার ধারাবাহিক বিবরণ লিপিবদ্ধ করতে হয়। উদাহরণস্বরূপ, জাহানারা ইমাম তার ছেলে রুমীর মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের ঘটনাগুলো দিনপঞ্জির আকারে লিখেছেন, যা শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনা সংরক্ষণ ও লেখার দক্ষতা অর্জন করতে সহায়ক এবং তাদের রচনামূলক প্রশ্ন ও অনুচ্ছেদ রচনার প্রস্তুতিতে সাহায্য করবে।

ক্যাডেট কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য এই অধ্যায়টি শিক্ষার্থীদের সাহিত্যের প্রতি আগ্রহ বাড়ায় এবং ইতিহাসের গভীরতা উপলব্ধি করতে শেখায়। এ ধরনের অধ্যায় পড়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা কেবল পরীক্ষা নয়, বরং জীবনের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা গ্রহণ করে—দেশপ্রেম, আত্মত্যাগ এবং একাত্তরের সংগ্রামের প্রতি শ্রদ্ধা।

 

 


 ছোট প্রশ্ন (১ নম্বর উপযোগী)

1.     ১৯ মার্চ,১৯৭১ কী বার ছিল ?
উঃ শুক্রবার ।

2.    আলোচ্য রচনায় কয়দিনের দিন লিপি আছে ?
উঃ তিন দিনের ।

3.    ২২ মার্চ ১৯৭১ কী বার ছিল ?

উঃ সোমবার ।

4.    রুমির স্টিকারটি তে কি লেখা হয়েছিল ?
উঃ একেকটি বাংলা অক্ষর একেকটি বাঙালির জীবন ।

5.    রুমি কখন নাস্তা সেড়ে বের হয়েছে ?
উঃ সাড়ে আট টা তে।

6.    একাত্তোরের দিনগুলি কোন ধরণের লেখা ?
উঃ রোজনামচা ।

7.    জাহানারা ইমাম সবার কাছে কী নামে পরিচিত ছিল ?

উঃ শহিদ জননী ।

8.    কামরুল হাসান কী হিসেবে পরিচিত ?
উঃ পটুয়া ।

9.    বাংলার পটুয়া সমাজ শাপলা ফুলকে কীসের প্রতীক হিসেবে গ্রহণ করার প্রস্তাব করে?
উঃ সংগ্রামী বাংলার প্রতীক ।

10. কারা মেহমান আপ্যায়নে অনেক ব্যস্ত ছিল ?
উঃ সুবহান , বারেক ও কাসেম ।

11. স্টিকারের পরিকল্পনা ও ডিজাইনার কে ?

উঃ শিল্পী কাম্রুল হাসান।

12. কামরুল হাসানের আকা দুর্দান্ত পোস্টার লেখিকা কোথায় দেখেছিলেন ?
উঃ শহিদ মিনারে ।

13.   লেখিকার ছেলের নাম কী ?
উঃ রুমী ।

14. রুমী যত্নসহকারে স্টিকার কোথায় সেটে রেখেছিলেন ?

উঃ গাড়ির কাচে  

15. সকাল সাড়ে আটটা তে কে বের হয়ে গেছেন ?
উঃ রুমী ও জামি ।

16. প্রায়োগিক শব্দের অর্থ কী ?

উঃ ব্যবহারিক ।

ছোট প্রশ্ন (৩ নম্বর উপযোগী)

1.     প্রায়োগিক লেখা কাকে বলে?

উঃ আমাদের প্রতিদিনের জীবনে যে সকল লেখা প্রায়ই প্রয়োগ করি, সে গুলোকে প্রায়োগিক লেখা বলে। যেমন:চিঠি , আবেদনপত্র , টেলিভিসনের স্ক্রল  ইত্যাদি।

2.    'রোজনামচায় ' লেখক  কোন কোন কাজের কথা উল্লেখ করেছেন?

উঃ নাশতা বানানো ও পরিবেশ,অতিথি আপ্যায়ন,স্বাধীন বাংলাদেশের নতুন পতাকা উড়ানো,শহিদ মিনারে গিয়ে আন্দোলনে অংশ গ্রহণ।

3.    একেকটি বাংলা অক্ষর একেকটি বাঙালির জীবন এর অর্থ কি?

উঃ বাঙগালীর প্রানের ভাষা বাংলা।বাংলা ভাষার একেকটি অক্ষরের পেছনে লুকিয়ে আছে ভাষা আন্দোলনে আত্মদানের অমর স্মৃতি।

4.    রোজনামচায় লেখার শুরুতে তারিখ দেওয়া হয় কেন?

উঃ রোজনামচা বা দিনলিপি লেখার ক্ষেত্রে  তারিখ খুব  গুরুত্বপূর্ণ। কোন নিদিষ্ট লেখার ক্ষেত্রে নিদিষ্ট তারিখ না দিলে তা কোন সময়ের ইতিহাসকে ধারন করছে তা বোঝা যায় না।তাই রোজনামচা বা দিনলিপিতে তারিখ লেখা হয়।

 

বড় প্রশ্ন 

 

  ১.  ২৩ মার্চ ১৯৭১ সালের প্রতিরোধ দিবস এবং সেই দিনের ঘটনা সম্পর্কে তোমার মতামত লেখ কীভাবে এই দিনটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল?

উত্তর: ২৩ মার্চ ১৯৭১ সালের প্রতিরোধ দিবসটি বাংলাদেশের স্বাধীনতার আন্দোলনে একটি ঐতিহাসিক দিন ছিল। এ দিনেই প্রথমবারের মতো স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়, যা বাঙালির স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হিসেবে পরিচিত। পতাকায় সবুজের মধ্যে লাল বৃত্ত এবং মানচিত্র দিয়ে স্বাধীনতার আশা এবং বাঙালির আত্মপরিচয় তুলে ধরা হয়েছিল।

এই দিনে মানুষের মধ্যে মিশ্র অনুভূতি ছিল—আনন্দ, উত্তেজনা, প্রত্যাশা, ভয় এবং অজানা আতঙ্ক। লোকেরা স্বাধীনতার জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে শুরু করে। এই দিনটি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সূচনা চিহ্নিত করে, কারণ এটি ছিল বাংলাদেশের জনগণের জন্য স্বাধীনতা অর্জনের পথে একটি বড় পদক্ষেপ।

এই ঘটনার মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ আরও তীব্রতর হয়, এবং মানুষজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতার জন্য একত্রিত হয়।

এই দিবসটি পরবর্তী দিনগুলোর জন্য বাঙালির মনোবল ও উদ্দীপনাকে আরও জাগ্রত করে, যা শেষ পর্যন্ত স্বাধীনতা অর্জনে ভূমিকা রাখে।

    ২.  কামরুল হাসান নিজেকে শিল্পী না বলে পটুয়া বলেন কেন?

উত্তর: কামরুল হাসান নিজেকে 'শিল্পী' না বলে 'পটুয়া' বলতেন, কারণ তিনি বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্যের প্রতি গভীর শ্রদ্ধাশীল ছিলেন। বাংলার লোকশিল্প এবং গ্রামীণ শিল্পীদের 'পটুয়া' বলে আখ্যায়িত করা হয়, যারা পটচিত্র আঁকতেন এবং সৃজনশীলতা দিয়ে সমাজের বিভিন্ন বার্তা তুলে ধরতেন। কামরুল হাসানও চিত্রকর্মের মাধ্যমে বাঙালির সংস্কৃতি, স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং জাতীয় চেতনা প্রকাশ করেছেন। এজন্য নিজেকে 'শিল্পী'র পরিবর্তে 'পটুয়া' বলে সম্বোধন করতেন, যা তার গ্রামীণ ঐতিহ্যের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধার প্রতীক।

    ৩.  ইমাম কে এবং কেন তিনি শহিদ জননী নামে পরিচিত?

উত্তর: জাহানারা ইমাম ছিলেন একজন বিশিষ্ট লেখিকা, শিক্ষিকা এবং মুক্তিযুদ্ধের সক্রিয় সমর্থক। তার সন্তান রুমী ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে শহিদ হন। নিজের সন্তানকে মুক্তিযুদ্ধে উৎসর্গ করার কারণে জাহানারা ইমাম "শহিদ জননী" নামে পরিচিত হন। তিনি নিজের লেখনীর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি এবং শহিদদের আত্মত্যাগকে তুলে ধরেছেন, যা তাকে এই সম্মানিত উপাধি দিয়েছে। তার বই "একাত্তরের দিনগুলি" মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়।

উপসংহার

এই অধ্যায় পাঠকদের মনে স্বাধীনতার ইতিহাসের সঙ্গে একটি গভীর সংযোগ তৈরি করে। একইসঙ্গে, রোজনামচা লেখার মাধ্যমে প্রতিদিনের ঘটনাবলির গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে, যা ইতিহাস সংরক্ষণে একটি প্রয়োজনীয় মাধ্যম। শিক্ষার্থীরা এখান থেকে আত্মবিশ্বাস এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা লালন করতে শিখবে, যা তাদের জীবনের মূল্যবোধ ও সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ করবে।



  



















































































No comments:

Post a Comment