বুঝে পড়ি লিখতে শিখি
২য় পরিচ্ছেদঃ বিবরণমুলক লেখা
"আমার দেখা নয়াচীন" বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিবরণমূলক রচনা, যেখানে তিনি চীনের উন্নত সমাজ ব্যবস্থা, শিক্ষা, এবং জনজীবনের অগ্রগতির বর্ণনা দিয়েছেন। এই অধ্যায়টি ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক, কারণ এটি ছাত্রছাত্রীদের বিভিন্ন দেশের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড এবং সমাজব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত হতে সহায়তা করে। এ ধরনের রচনা পড়ে শিক্ষার্থীরা বিশ্লেষণ ক্ষমতা এবং বর্ণনামূলক লেখার দক্ষতা অর্জন করতে পারে, যা ক্যাডেট কলেজের পরীক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বঙ্গবন্ধুর এই অভিজ্ঞতামূলক বর্ণনা শিক্ষার্থীদের একটি বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে এবং তাদের নিজের দেশ সম্পর্কে আরও সচেতন ও দায়িত্বশীল হতে উদ্বুদ্ধ করে, যা তাদের ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতিকে সমৃদ্ধ করে।
ছোট প্রশ্ন
১. লেখক মিউজিয়ামে গিয়ে কী দেখলেন?
উ: পুরোনো কালের অনেক স্মৃতি দেখলেন।
২. লেখক যে পাবলিক লাইব্রেরিতে গিয়েছিলেন তা চীনের কোন শহরে অবস্থিত?
উ: পাবলিক লাইব্রেরিটি সাংহাই শহরে অবস্থিত।
৩. ইমপেরিয়াল লাইব্রেরি কোথায় অবস্থিত?
উ: ইমপেরিয়াল লাইব্রেরি কলকাতায় অবস্থিত।
৪. 'চলুন যেখানে সবচেয়ে বড়ো বাজার, সেখানে নিয়ে চলুন।'- লেখক এ কথা কাকে বললেন?
উ: লেখক এ কথাটি দোভাষীকে বললেন।
৫. চীনে জিনিসপত্রের দাম বাড়তে পারে না কেন?
উ: চীনের জিনিস পত্রের দাম বাড়তে পারে না জনসাধারণ খুব সজাগ হয়ে উঠেছে বলে।
৬. সংহাই শহরের পাশে বয়ে চলা নদীতে নৌকা কী দিয়ে চলে?
উ: সাংগাই শহরের পাশে বয়ে চলা নদীতে নৌকা বাদাম দিয়ে চলে।
৭. 'চশমা' শব্দটি কোন ভাষা থেকে আগত?
উ: ফারসি
৮. 'পানি' কোন ভাষার শব্দ?
উ: হিন্দি
৯. 'আদালত ' কোন ভাষার শব্দ?
উ: আরবি।
১০. 'সরকার কায়েম হওয়া' দ্বারা কী বোঝায়?
উ: সরকার প্রতিষ্ঠা হওয়া।
বড় প্রশ্ন
১. নতুন চীনা সমাজতান্ত্রিক শাসনের বৈশিষ্ট্যগুলো কী কী?
উত্তর: নতুন চীনা সমাজতান্ত্রিক শাসনের বৈশিষ্ট্যগুলো হলো শৃঙ্খলা, দায়িত্ববোধ এবং জনকল্যাণ। চীনা সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি ও জনসেবার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। সাধারণ জনগণের জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার সুযোগ এবং সরকারি সম্পদের সমবণ্টন এই ব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। এছাড়া সাধারণ মানুষকেও কঠোর শৃঙ্খলা মেনে চলতে হয়, যা দেশের উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
২. সাংহাই শহরের বর্ণনা কীভাবে দেওয়া হয়েছে এবং এর বৈশিষ্ট্য কী?
উত্তর: সাংহাই শহরের বর্ণনায় বলা হয়েছে, এটি একটি ব্যস্ততম বন্দর নগরী যেখানে আধুনিকতার ছোঁয়া স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা যায়। এই শহরে নানা স্থাপনা এবং উন্নত অবকাঠামো আছে, যা শহরের অগ্রগতির প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। এখানে বড় লাইব্রেরি, প্রশস্ত মাঠ এবং আধুনিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে, যা সাংহাইকে চীনের অন্যতম প্রধান ও সমৃদ্ধশালী শহর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছে।
৩. চীনের জনগণের জীবনধারায় কী ধরনের শৃঙ্খলা এবং দায়িত্ববোধ লক্ষ্য করা যায়?
উত্তর: চীনের জনগণের জীবনধারায় কঠোর শৃঙ্খলা এবং দায়িত্ববোধ লক্ষ্য করা যায়। তাদের জীবনে ছোটখাটো বিষয় থেকে শুরু করে বড় বিষয়েও শৃঙ্খলার প্রতিফলন দেখা যায়। তারা সরকারি নিয়ম-কানুন কঠোরভাবে মেনে চলে এবং সামাজিক সুরক্ষা ও সাধারণ শৃঙ্খলা বজায় রাখতে যথাযথ ভূমিকা পালন করে।
৪. সাংহাইয়ের বড় লাইব্রেরি এবং এর শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে লেখকের অভিজ্ঞতা কী?
উত্তর: সাংহাইয়ের লাইব্রেরি এবং শিক্ষাব্যবস্থার বিষয়ে লেখকের অভিজ্ঞতা অত্যন্ত ইতিবাচক ছিল। তিনি লাইব্রেরির বিশাল পরিসর, সুশৃঙ্খল পরিবেশ এবং বৈচিত্র্যময় বইসম্ভার দেখে মুগ্ধ হন। এখানে শিক্ষার্থীরা শৃঙ্খলা মেনে পড়াশোনা করে এবং শিক্ষার প্রতি গভীর মনোযোগ দেয়। সাংহাইয়ের শিক্ষাব্যবস্থা শিক্ষার্থীদের শিক্ষার পরিবেশ এবং সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য উন্নত অবকাঠামো এবং আধুনিক পদ্ধতি গ্রহণ করেছে, যা লেখকের কাছে শিক্ষণীয় ও অনুকরণীয় মনে হয়েছে।
৫. চীনের সাধারণ জনগণের মধ্যে কীভাবে ভীতির সঞ্চার হয়েছিল, এবং এর প্রভাব কী ছিল?
উত্তর: চীনের সাধারণ জনগণের মধ্যে ভীতির সঞ্চার হয়েছিল কঠোর শাসন ব্যবস্থার কারণে। সেখানে যেকোনো ধরনের অনিয়মের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা ছিল। ফলে মানুষদের মধ্যে কর্তৃপক্ষের প্রতি এক ধরনের স্বাভাবিক ভীতি কাজ করত, যা তাদের শৃঙ্খলা মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করত। এর ফলে, জনগণ নিজেদের দায়িত্ববোধকে আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখত এবং নিয়ম মেনে চলার চেষ্টা করত, যা চীনের সার্বিক শৃঙ্খলাকে মজবুত করে তুলেছিল।
৬. চীনের শিক্ষা এবং জনসেবা সম্পর্কে লেখকের পর্যবেক্ষণ কী ছিল?
উত্তর: লেখক চীনের শিক্ষা এবং জনসেবা ব্যবস্থা দেখে মুগ্ধ হন। তিনি লক্ষ্য করেন, চীনের শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত সুশৃঙ্খল এবং জনসেবায় নিয়োজিত কর্মীরা আন্তরিকভাবে কাজ করে। বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার্থীদের উন্নতির জন্য সেরা পরিবেশ ও সুযোগ নিশ্চিত করা হয়। জনসেবা ব্যবস্থার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ সঠিক সেবা পেয়ে থাকে, যা একটি সমাজের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
"আমার দেখা নয়াচীন" অধ্যায়টি ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতির জন্য অপরিহার্য, কারণ এটি শিক্ষার্থীদের বর্ণনামূলক এবং বিশ্লেষণধর্মী লেখার দক্ষতা উন্নত করতে সহায়ক। বঙ্গবন্ধুর অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ এই রচনা ছাত্রদের একটি উন্নত দেশ গঠনের জন্য বিভিন্ন দেশের উন্নয়ন ধারণা গ্রহণে উৎসাহিত করে। এই ধরনের রচনার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক বাস্তবতা সম্পর্কে সচেতন হয়ে ওঠে, যা ভর্তি পরীক্ষায় তাদের সাধারণ জ্ঞান এবং তথ্যভিত্তিক উত্তর প্রদানের সক্ষমতা বাড়ায়। সুতরাং, "আমার দেখা নয়াচীন" শুধু একটি রচনা নয়, বরং ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষার জন্য শিক্ষার্থীদের তথ্যভাণ্ডার সমৃদ্ধ করার একটি অনন্য মাধ্যম।
No comments:
Post a Comment