বুঝে পড়ি লিখতে শিখি ( ৪র্থ পরিচ্ছেদঃ বিশ্লেষনমুলক লেখা)
ক্যাডেট কলেজের ভর্তি পরীক্ষা এমন একটি প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা, যেখানে শিক্ষার্থীদের পাঠ্য বিষয়ের গভীর জ্ঞান এবং অনুধাবন ক্ষমতা যাচাই করা হয়। এ ধরনের পরীক্ষায় বাংলা সাহিত্য ও ভাষার সঠিক বিশ্লেষণ, বোধশক্তি এবং ব্যাখ্যামূলক প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার দক্ষতা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। অধ্যায়টি এই পরীক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব বহন করে, কারণ এটি পরিবেশ সংরক্ষণ, কীটপতঙ্গ দমন, এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্যের মতো গুরুত্বপূর্ণ ধারণাগুলো উপস্থাপন করে। এই অধ্যায়টি শিক্ষার্থীদের মননশীলতা বিকাশের পাশাপাশি জ্ঞানকে বিশ্লেষণ ও সমালোচনা করার দক্ষতা বাড়ায়, যা ক্যাডেট কলেজের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নোত্তর এবং রচনামূলক অংশে সহায়ক।
ছোট প্রশ্ন
১. কীটপতঙ্গ সংরক্ষণে কীটনাশকের বিকল্প কী প্রাকৃতিক উপায়গুলো সম্পর্কে ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণে প্রাকৃতিক উপায়ে শিকারী প্রাণীদের ব্যবহার করা হয়। এটি
পরিবেশ বান্ধব এবং দীর্ঘমেয়াদী সমাধান।
২. লেখক কীভাবে কীটপতঙ্গ সংরক্ষণ এবং পরিবেশের ভারসাম্যের মধ্যে সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করেছেন?
উত্তর: লেখক বলেছেন, কীটপতঙ্গের
প্রাকৃতিক শিকারী প্রাণীরা পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখে, যা
পরিবেশ রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
৩. কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহারে পরিবেশ ও প্রাণীজগতের উপর কী ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ে?
উত্তর: কীটনাশক পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে, মাটির
গুণাগুণ কমায়, এবং পানির উৎস
দূষিত করে, যা মানব
ও প্রাণিজগতে বিপদ ডেকে আনে।
৪. লেখক কীটপতঙ্গ সংরক্ষণে প্রাণী ও পাখির ভূমিকার উদাহরণ কীভাবে দিয়েছেন?
উত্তর: লেখক কাক, চড়ুই,
টিকটিকি ইত্যাদি প্রাণীর উদাহরণ দিয়েছেন যারা কীটপতঙ্গ খেয়ে
পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখে।
৫. লেখক কীটপতঙ্গ সংরক্ষণের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করতে কোন কোন তথ্য উপস্থাপন করেছেন?
উত্তর: লেখক বলেছেন কীটপতঙ্গ
সংরক্ষণ পরিবেশ ও কৃষির ভারসাম্য
বজায় রাখে এবং প্রয়োজনীয়
প্রজাতির সংরক্ষণে সহায়ক হয়।
৬. কীটনাশক ব্যবহারের পরিবর্তে কীটপতঙ্গ দমনের জন্য লেখক কোন প্রাকৃতিক উপায়গুলো সুপারিশ করেছেন?
উত্তর: লেখক বিভিন্ন শিকারী
প্রাণীর মাধ্যমে কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণের পরামর্শ দিয়েছেন, যা পরিবেশ বান্ধব
এবং নিরাপদ।
৭. কীভাবে কীটনাশকের ব্যবহার পরিবেশের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, তা ব্যাখ্যা করো।
উত্তর: কীটনাশক মাটি, পানি, এবং প্রয়োজনীয় জীবকে
ক্ষতিগ্রস্ত করে যা পুরো
খাদ্যশৃঙ্খলে প্রভাব ফেলে।
৮. কীটপতঙ্গ
সংরক্ষণে লেখকের পরামর্শ অনুযায়ী কোন প্রাণীগুলো বিশেষ ভূমিকা পালন করে?
উত্তর: কাক, চড়ুই, গুইসাপ
এবং টিকটিকি কীটপতঙ্গ নিয়ন্ত্রণে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
বড় প্রশ্ন
১. কীটনাশকের ব্যবহার ও প্রাকৃতিক কীটপতঙ্গ
নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার মধ্যে তুলনামূলক বিশ্লেষণ করো।
উত্তর: কীটনাশক ব্যবহারে
তাৎক্ষণিক কীটপতঙ্গ দমন হলেও পরিবেশ এবং অন্যান্য জীবের উপর এর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে।
বিপরীতে, প্রাকৃতিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় শিকারী প্রাণীরা কীটপতঙ্গের সংখ্যা স্বাভাবিকভাবে
নিয়ন্ত্রণ করে, যা পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে সহায়তা করে এবং দীর্ঘমেয়াদী পরিবেশগত
স্থিতিশীলতা আনে।
২. কীটপতঙ্গ সংরক্ষণে পরিবেশগত ভারসাম্যের
গুরুত্ব ব্যাখ্যা করো এবং কীভাবে এটি প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণে সহায়তা করে।
উত্তর: পরিবেশগত ভারসাম্য
বজায় থাকলে কীটপতঙ্গের সংখ্যা প্রাকৃতিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়, যা জমির উর্বরতা ও কৃষি
উৎপাদনশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা করে। এতে করে কীটনাশকের ব্যবহার কমে যায়, ফলে পরিবেশে
রাসায়নিক দূষণও কম হয়।
৩. লেখক কীটপতঙ্গ সংরক্ষণে যে প্রাকৃতিক
পদ্ধতিগুলি উল্লেখ করেছেন, সেগুলি পরিবেশ বান্ধব ও দীর্ঘমেয়াদী সমাধান হিসাবে কেন
গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তর: লেখক উল্লেখ
করেছেন যে প্রাকৃতিক শিকারী প্রাণী যেমন কাক, চড়ুই, গুইসাপ ইত্যাদি কীটপতঙ্গ দমন করতে
পারে। এসব পদ্ধতি দীর্ঘমেয়াদী সমাধান, কারণ এটি পরিবেশকে দূষিত না করেই কীটপতঙ্গের
সংখ্যা কমায় এবং পুরো ইকোসিস্টেমের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সহায়ক হয়।
৪. কীটনাশকের ব্যবহারের সামাজিক, পরিবেশগত,
এবং অর্থনৈতিক প্রভাব বিশ্লেষণ করো।
উত্তর: কীটনাশকের ব্যবহার
স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে এবং দূষণের মাধ্যমে পরিবেশের ক্ষতি করে। সামাজিকভাবে
এটি রোগ বিস্তারের কারণ হতে পারে, আর অর্থনৈতিকভাবে এটি কৃষকদের জন্য বাড়তি ব্যয়ের
কারণ হয়ে দাঁড়ায়, যা দীর্ঘমেয়াদে কৃষি ও মানবসম্পদ উভয়ের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
৫. কীটনাশক ও প্রাকৃতিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার
প্রভাবসমূহ উদাহরণসহ বিশ্লেষণ করো।
উত্তর: কীটনাশক ব্যবহার
করলে কীটপতঙ্গ দ্রুত নির্মূল হয়, তবে এটি অন্যান্য উপকারী প্রাণী যেমন মাটির জীবাণু
ও প্রয়োজনীয় কীটকেও ক্ষতি করে। বিপরীতে, প্রাকৃতিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় কাক বা টিকটিকির
মতো প্রাণীরা কীটপতঙ্গ খেয়ে তাদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখে, যা পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা
করে এবং কৃষিতে রাসায়নিকের ব্যবহার কমাতে সহায়তা করে।
অধ্যায়টি ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি পরিবেশবিজ্ঞান, নৈতিক শিক্ষা এবং মানবিক চেতনা বিকাশের সঙ্গে সম্পৃক্ত। এটি শিক্ষার্থীদের গভীরতর বিশ্লেষণ এবং বাস্তব জীবনের উদাহরণ দিয়ে পরিবেশের গুরুত্ব উপলব্ধি করায়। শিক্ষার্থীরা এই অধ্যায় থেকে কীটনাশকের ক্ষতিকর প্রভাব, প্রাকৃতিক কীটনাশকের ব্যবহার, এবং কীভাবে প্রাকৃতিক উপায়ে পরিবেশ সংরক্ষণ করা যায়, তা শিখতে পারে। এ ধরনের পাঠ্যাংশের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শুধু ভালো ফলই করে না, বরং পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন এবং সচেতনতা অর্জনের পথেও অনুপ্রাণিত হয়।