Sunday, 15 December 2024

সমোচ্চারিত শব্দ

ভূমিকা

ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় সমোচ্চারিত শব্দের গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। কারণ, এই শব্দগুলো বাংলা ভাষার শুদ্ধ উচ্চারণ ও ব্যাকরণের সঠিক প্রয়োগ বুঝতে সাহায্য করে। সমোচ্চারিত শব্দ বলতে সেই শব্দগুলোকে বোঝায় যেগুলোর উচ্চারণ এক হলেও অর্থ ভিন্ন। যেমন: কলি (গানের কলি) ও কলি (অন্ধকার যুগ)। পরীক্ষায় প্রায়ই এই ধরনের শব্দ নিয়ে প্রশ্ন থাকে, যা ছাত্রছাত্রীদের ভাষাজ্ঞান ও বিশ্লেষণ ক্ষমতা যাচাই করে।

গুরুত্ব

১. ভাষাগত দক্ষতা বৃদ্ধি: সমোচ্চারিত শব্দ শিখলে ভাষার প্রতি শিক্ষার্থীর ধারণা আরও গভীর হয়।
২. শুদ্ধ বানান ও ব্যবহার: সঠিক শব্দের প্রয়োগে পরীক্ষার মূল্যায়ন সহজ হয়।
৩. বিশ্লেষণী ক্ষমতা: এই শব্দগুলোর পার্থক্য বুঝতে হলে শিক্ষার্থীকে অর্থ ও প্রয়োগ বিশ্লেষণ করতে হয়।
৪. প্রশ্নের বৈচিত্র্য: ভর্তি পরীক্ষায় এই বিষয় নিয়ে অনেক বৈচিত্র্যময় প্রশ্ন করা হয়।
৫. শিক্ষার্থী মূল্যায়ন: ভাষার শুদ্ধতা ও ব্যাকরণগত দক্ষতা পরিমাপে এটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ।

 

  • অণু: পদাৰ্থৰ অতি ক্ষুদ্ৰ অংশ
  • অনু: উপসৰ্গ-বিশেষ্য
  • অটল: দৃঢ়
  • অতল: আৰু গভীৰ
  • আঁচল: চাদৰৰ আগ
  • আচল: যিটো নকল নহয়
  • আলি: ওখ পথ
  • আলী: উপাধি বিশেষ
  • এসাঁজ: এবাৰত খাবৰ জোখৰ
  • এসাজ: এবাৰত খাবৰ দিব পৰা
  • কাঁহ: এবিধ ধাতু
  • কাহ: এবিধ ৰোগ
  • কুলি: চৰাই -বিশেষ
  • কুলী: বনুৱা
  • গাঁও: গ্ৰাম
  • গাওঁ: গীত-মাত পৰিৱেশন কৰোঁ
  • ঘঁটি: নাকৰ ভিতৰৰ নোম
  • ঘটী: পাত্ৰ বিশেষ
  • চিন: দাগ বা চিহ্ন
  • ফল: কোনো কাৰ্যৰ পৰিণতি
  • ফল: গছৰ গুটি
  • ভাট: প্ৰশস্তি গাওঁতা
  • ভাত: অন্ন
  • মাটি: মৃত্তিকা
  • মাতি: আমন্ত্ৰণ কৰি
  • ৰং: আনন্দ
  • ৰং: বৰণ
  • সজা: চৰাই আদি থোৱা কাঠীৰ সঁজুলি বা বাহ
  • সজা: আনলোকৰ দ্বাৰা নিৰ্মাণ কৰা; তৈয়াৰ কৰা
  • হাট: সপ্তাহৰ নিৰ্দিষ্ট দিনত বহা হাত বজাৰ
  • হাত: দেহৰ অংগ বিশেষ, কৰ

 

 

উপসংহার

সমোচ্চারিত শব্দের সঠিক ব্যবহার ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় সাফল্যের গুরুত্বপূর্ণ চাবিকাঠি। এটি কেবল পরীক্ষার ফলাফলে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে না, শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে তোলে। সুতরাং, বাংলা ভাষার প্রতি আগ্রহী হতে এবং সমোচ্চারিত শব্দ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা রাখতে শিক্ষার্থীদের এই বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া উচিত।

 

 

Thursday, 12 December 2024

১০০ টি এক কথায় প্রকাশ

 

ভূমিকা:

বাংলা ভাষার বিশাল শব্দভান্ডার আমাদের ভাব প্রকাশের ক্ষমতাকে সমৃদ্ধ করে। বিভিন্ন বাক্য বা ধারণা এক শব্দে প্রকাশ করার কৌশলকে বলা হয় "এক কথায় প্রকাশ"। এটি ভাষাকে সংক্ষেপে, নির্ভুলভাবে এবং সহজে বোঝার উপযোগী করে তোলে। বিশেষত, লেখার সময় বা যোগাযোগে দ্রুত ও সুনির্দিষ্ট ভাব প্রকাশের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় বাংলা ভাষা দক্ষতা যাচাইয়ের অংশ হিসেবে "এক কথায় প্রকাশ" একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ এটি পরীক্ষার্থীদের শব্দভান্ডার, ব্যাকরণজ্ঞান এবং ভাষার উপর দখল পরিমাপ করতে সহায়তা করে।

এক কথায় প্রকাশের গুরুত্ব ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষায়:

১। শব্দভান্ডার বৃদ্ধি:
এক কথায় প্রকাশের চর্চা শিক্ষার্থীদের শব্দভান্ডারকে সমৃদ্ধ করে।

২। ভাষার উপর দখল:
এটি পরীক্ষার্থীদের ভাষার প্রতি শুদ্ধ ও সংক্ষিপ্ত জ্ঞানের পরিচায়ক।

৩। প্রশ্নের কাঠামো বুঝতে সহায়তা:
বাংলা অংশে এটি সহজ পদ্ধতিতে বেশি নম্বর পেতে সহায়তা করে।

৪। লিখিত ও মৌখিক দক্ষতা বৃদ্ধি:
এক কথায় প্রকাশের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্য সংক্ষেপে এবং কার্যকরভাবে প্রকাশ করতে পারে।

৫। সৃজনশীল চিন্তাভাবনা:
এটি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল ও বিশ্লেষণধর্মী চিন্তা করতে উদ্বুদ্ধ করে।

 

১০০ টি এক কথায় প্রকাশ


১. কুকুরের ডাক = বুক্কন
২. রাজহাঁসের ডাক = ক্রেঙ্কার
৩. বিহঙ্গের ডাক/ধ্বনি = কূজন/কাকলি
৪. করার ইচ্ছা = চিকীর্ষা
৫. ক্ষমা করার ইচ্ছা = চিক্ষমিষা/তিতিক্ষা
৬. ত্রাণ লাভ করার ইচ্ছা = তিতীর্ষা
৭. গমন করার ইচ্ছা = জিগমিষা
৮. নিন্দা করার ইচ্ছা = জুগুপ্সা
৯. বেঁচে থাকার ইচ্ছা = জিজীবিষা
১০. পেতে ইচ্ছা = ঈপ্সা
১১. চোখে দেখা যায় এমন = চক্ষুগোচর
১২. চোখের নিমেষ না ফেলিয়া = অনিমেষ
১৩. গম্ভীর ধ্বনি = মন্দ্র
১৪. মুক্তি পেতে ইচ্ছা = মুমুক্ষা
১৫. বিজয় লাভের ইচ্ছা = বিজিগীষা
১৬. প্রবেশ করার ইচ্ছা = বিবক্ষা
১৭. বাস করার ইচ্ছা = বিবৎসা
১৮. বমন করিবার ইচ্ছা = বিবমিষা
১৯. রমণ বা সঙ্গমের ইচ্ছা = রিরংসা
২০.আমার তুল্য =সাদৃশ
২১. ইহার তুল্য = ইদৃশ
২২. ঋষির তুল্য = ঋষিকল্প
২৩. দেবতার তুল্য = দেবোপম
২৪. রন্ধনের যোগ্য = পাচ্য
২৫. জানিবার যোগ্য = জ্ঞাতব্য
২৬. প্রশংসার যোগ্য = প্রশংসার্হ
২৭. ঘ্রাণের যোগ্য = ঘ্রেয়
২৮. যাহা সহজে লঙ্ঘন করা যায় না = দুলঙ্ঘ্য
২৯. যাহা সহজে উত্তীর্ণ হওয়া যায় না = দুস্তর
৩০. যা বলা হয়েছে = বক্ষ্যমাণ
৩১. যা পূর্বে চিন্তা করা যায় নি = অচিন্তিতপূর্ব
৩২. যা পূর্বে কখনও আস্বাদিত হয় নাই = অনাস্বাদিতপূর্ব
৩৩. যা পূর্বে শোনা যায় নি = অশ্রুতপূর্ব
৩৪. হিরণ্য (স্বর্ণ) দ্বারা নির্মিত = হিরন্ময়
৩৫. বাতাসে চরে যে = কপোত
৩৬. পূর্ব জন্মের কথা স্মরণ আছে যার = জাতিস্বর
৩৭. সরোবরে জন্মায় যাহা = সরোজ
৩৮. সর্বদা ইতস্তত ঘুরিয়া বেড়াইতেছে = সততসঞ্চরমান
৩৯. যা পুনঃ পুনঃ জ্বলিতেছে = জাজ্বল্যমান
৪০. সকলের জন্য প্রযোজ্য =সর্বজনীন
৪১. সকলের জন্য অনুষ্ঠিত = সার্বজনীন
৪২. প্রায় প্রভাত হয়েছে এমন = প্রভাতকল্পা
৪৩. রাত্রির মধ্যভাগ = মহানিশা
৪৪. স্মৃতিশাস্ত্রে পণ্ডিত যিনি = শাস্ত্রজ্ঞ
৪৫. স্মৃতি শাস্ত্র রচনা করেন যিনি =শাস্ত্রকার
৪৬. যিনি স্মৃতি শাস্ত্র জানেন = স্মার্ত
৪৭. শক্তির উপাসনা করে যে = শাক্ত
৪৮. এখনও শত্রু জন্মায় নাই যার = অজাতশত্রু
৪৯. এখনও গোঁফ-দাড়ি গজায় নাই যাহার = অজাতশ্মশ্রু
৫০. যে ব্যক্তি এক ঘর হতে অন্য ঘরে ভিক্ষা করে বেড়ায় = মাধুকর
৫১. অন্যদিকে মন নাই যার = অনন্যমনা
৫২. খেয়া পার করে যে = পাটনী
৫৩. নিজেকে বড় ভাবে যে = হামবড়া
৫৪. নিজেকে যে নিজেই সৃষ্টি করেছে = সয়ম্ভূ
৫৫. নিতান্ত দগ্ধ হয় যে সময়ে (গ্রীষ্মকাল) = নিদাঘ
৫৬. যা গতিশীল = জঙ্গম
৫৭. যে বিষয়ে কোন বিতর্ক নেই = অবিসংবাদী
৫৮. স্ত্রীর বশীভূত = স্ত্রৈণ
৫৯. অত্যন্ত তরল জল নিঃসরণ = অতিসার/অতীসার
৬০. অঙ্গীকৃত মাল তৈরির জন্য প্রদত্ত অগ্রিম অর্থ = দাদন
৬১. অতি উচ্চ ধ্বনি = মহানাদ
৬২. অতিশয় রমণীয় = সুরম্য
৬৩. অণুর ভাব = অণিমা
৬৪. অগ্র-পশ্চাৎ ক্রম অনুযায়ী = আনুপূর্বিক
৬৫. অবজ্ঞায় নাক উঁচু করে যে = উন্নাসিক
৬৬. অসির শব্দ = ঝঞ্জনা
৬৭. অন্ধকার রাত্রি = তামসী
৬৮. অশ্বের চালক = সাদী
৬৯. ঈষৎ নীলাভবিশিষ্ট = আনীল
৭০. ঈষৎ উষ্ণ = কবোষ্ণ
৭১. ঈষৎ পাংশু বর্ণ = কয়রা
৭২. আকস্মিক দুর্দৈব = উপদ্রব
৭৩.আঙুর ফল = দ্রাক্ষা
৭৪. আজীবন সধবা যে নারী = চিরায়ুষ্মতী
৭৫. উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া ধন = রিকথ
৭৬. উটের/হস্তীর শাবক = করভ
৭৭. ঋষির দ্বারা উক্ত(কথিত) = আর্য
৭৮. ঋজুর ভাব = আর্জব
৭৯. ঋতুর সম্বন্ধে = আর্তব
৮০. ঔষধের আনুষঙ্গিক সেব্য = অনুপান
৮১. কংসের শত্রু যিনি = কংসারি
৮২. কালো হলুদের মিশানো রঙ = কপিশ,কপিল
৮৩. ক্ষুধার অল্পতা = অগ্নিমান্দ্য
৮৪. কটিদেশ থেকে পদতল পর্যন্ত অংশ = অধঃকায়
৮৫. কৃষ্ণবর্ণ হরিণ = কালসার
৮৬. ক্রীড়নশীল তরঙ্গ = চলোর্মি
৮৭. কাচের তৈরি ঘর = শিশমহল
৮৮. কোন বিষয়ে যে শ্রদ্ধা হারিয়েছে = বীতশ্রদ্ধ
৮৯. কনুই থেকে বদ্ধ মুষ্টি পর্যন্ত পরিমাণ = রত্নি
৯০. কপালে আঁকা তিলক = রসকলি
৯১. কচি তৃণাবৃত ভূমি = শাদ্বল
৯২. ক্ষিতি, জল,তেজ বায়ু থেকে সঞ্জাত = চতুভৌতিক
৯৩. গৃহের প্রধান প্রবেশ পথ = দেহলি,দেউড়ি
৯৪. গরম জল = উষ্ণোদক
৯৫. গর্দভের বাসস্থান = খরশাল
৯৬. গুরুগৃহে বাস = অন্তেবাসী
৯৭. গ্রন্থাদির অধ্যায় = স্কন্দ
৯৮. গুরুর পত্নী = গুর্বী
৯৯. গাধার ডাক = রাসভ
১০০. ঘর্ষণ বা পেষণজাত গন্ধ = পরিমল

 

 

উপসংহার:

এক কথায় প্রকাশ কেবল ভাষার একটি অংশ নয়, এটি একটি দক্ষতা যা শিক্ষার্থীদের একাডেমিক জীবনে ও পেশাগত জীবনে সাহায্য করে। ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় এটি পরীক্ষার্থীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, কারণ এটি কেবল তাদের জ্ঞান যাচাই নয়, বরং তাদের ভাষাগত সক্ষমতার পরিচায়ক। নিয়মিত অনুশীলন ও অধ্যবসায়ের মাধ্যমে এক কথায় প্রকাশে দক্ষতা অর্জন সম্ভব, যা পরীক্ষার সাফল্যের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সহায়ক।

 

 

 

 

 

 

 

Monday, 18 November 2024

বানানরীতি লেখার নিয়ম

 ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষা বাংলাদেশে একটি অত্যন্ত প্রতিযোগিতামূলক এবং মর্যাদাপূর্ণ সুযোগ। এই পরীক্ষায় কেবলমাত্র মেধার ভিত্তিতে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হয়, যেখানে বাংলা ভাষার সঠিক জ্ঞান একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বাংলা ভাষার সঠিক বানান জ্ঞান পরীক্ষার্থীর ভাষা দক্ষতা এবং ব্যাকরণের উপর দখল প্রদর্শন করে। বানান শুধুমাত্র শুদ্ধ লেখার একটি অংশ নয়, এটি শিক্ষার্থীর চিন্তাভাবনা ও উপস্থাপন দক্ষতার পরিচায়ক। তাই, বানান জ্ঞানের অভাব পরীক্ষায় ভালো ফল অর্জনে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

বানান বলতে বোঝায় একটি শব্দের সঠিক ধ্বনি, উচ্চারণ এবং বর্ণমালার সঠিক ক্রমানুসারে লিখনপদ্ধতি। এটি ভাষার সঠিক প্রয়োগ ও শুদ্ধতা বজায় রাখতে অপরিহার্য।

বানান হলো বুঝিয়ে বলা। লিখিত ভাষায় এই বলা স্বরবর্ণের পর স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণের পর ব্যঞ্জনবর্ণ অথবা স্বরবর্ণের পর ব্যঞ্জনবর্ণ বা ব্যঞ্জনবর্ণের পর স্বরবর্ণ যোগ করাকে বোঝায়।

বানান শিখতে বা লিখতে গেলে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, পরিপূর্ণভাবে ধ্বনি অনুযায়ী বানান লেখার নিয়ম বিশ্বের কোনো ভাষায় নেই। ধ্বনিতত্ত্ব অংশে আমরা দেখেছি যে, আমাদের ভাষায় সব বর্ণ সব ধ্বনির প্রতিনিধিত্ব করে না। কিন্তু সব বর্ণই আমাদের লিখনপদ্ধতির আশ্রয়।

বানানরীতি পাঠের প্রয়োজনীয়তা

বাংলা বানানরীতি পাঠের প্রয়োজনীয়তা অনেক কারণেই গুরুত্বপূর্ণ। এটি ভাষার সঠিক ব্যবহারে শৃঙ্খলা আনতে এবং যোগাযোগকে সহজ ও কার্যকর করতে সাহায্য করে। নিচে এর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হলো:

 

১. সঠিক যোগাযোগ নিশ্চিতকরণ

 

সঠিক বানান ব্যবহারের মাধ্যমে লেখা বা কথার অর্থ স্পষ্টভাবে বোঝানো সম্ভব।

ভুল বানান অর্থের বিভ্রান্তি সৃষ্টি করতে পারে।

 

২. ভাষার সৌন্দর্য রক্ষা

 

প্রমিত বানানরীতি অনুসরণ করলে ভাষার শৈলী ও সৌন্দর্য বজায় থাকে।

এটি লেখার মান বৃদ্ধি করে।

 

৩. একীভূত ভাষা গঠন

 

বানানরীতি একটি ভাষার অভিন্ন রূপ তৈরি করে, যা দেশের সব অঞ্চলে গ্রহণযোগ্য হয়।

আঞ্চলিক পার্থক্যের কারণে উচ্চারণে ভিন্নতা থাকলেও প্রমিত বানানরীতি সবার জন্য সমান।

 

৪. শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জনে সহায়ক

 

শিক্ষার্থীদের ভাষা শিক্ষার ক্ষেত্রে বানানরীতি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ভুল বানান শিখলে তা ভবিষ্যতে লেখালেখিতে সমস্যা তৈরি করতে পারে।

 

৫. পরীক্ষা ও প্রতিযোগিতায় সফলতা

 

সঠিক বানান শিখলে একাডেমিক পরীক্ষায় এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ভালো ফল করা সহজ হয়।

বিশেষ করে ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় প্রমিত বানানরীতির গুরুত্ব অপরিসীম।

 

৬. ভাষার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি রক্ষা বাংলা ভাষার ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির সঠিক চর্চার জন্য বানানরীতি মেনে চলা জরুরি।

 

এটি ভাষার গৌরব ও মর্যাদা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

 

৭. অভিধানের সঠিক ব্যবহার

 

বানানরীতি জানলে অভিধান থেকে শব্দ খুঁজে বের করা সহজ হয়।

এটি শব্দার্থ ও বাক্যগঠন শেখার প্রক্রিয়াকে সহজ করে।

 

৮. ভুল থেকে বাঁচার জন্য

 

সঠিক বানান শেখার ফলে লেখায় ভুল কম হয় এবং এর ফলে পাঠক বা শ্রোতার কাছে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে না।

 

বানানরীতি  লেখার নিয়ম

 

. উপসর্গ প্রত্যয়ের সঠিক প্রয়োগ

 

শব্দে উপসর্গ বা প্রত্যয় যোগ করলে বানানের শুদ্ধতা বজায় রাখতে হবে।

উদাহরণ:

উপসর্গ: +শিক্ষাঅশিক্ষা

প্রত্যয়: জানা + তেজানতে

. সমার্থক শব্দের শুদ্ধ বানান

 

একই শব্দের ভিন্ন রূপের শুদ্ধতা নিশ্চিত করতে হবে।

উদাহরণ:

মূর্খ (শুদ্ধ) → অজ্ঞ (সমার্থক)

মলিন (শুদ্ধ) → অনুজ্জ্বল (সমার্থক)


. '' 'ড়' এর পার্থক্য

 

 এবংড়’-এর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

উদাহরণ:

ভুল: বোরোশুদ্ধ: বড়ো

ভুল: বাড়ীশুদ্ধ: বাড়ি

 

. ইংরেজি শব্দের বাংলা বানান

 

ইংরেজি শব্দের বাংলা রূপান্তরে উচ্চারণের কাছাকাছি বানান ব্যবহার করতে হবে।

উদাহরণ:

ভুল: টেলিভিসনশুদ্ধ: টেলিভিশন

 

. বাংলা একাডেমির নিয়ম মেনে লেখা

বাংলা একাডেমির বানান অভিধান অনুসারে বানান শিখতে হবে।

 

. রেফ (-ফলা) এর ব্যবহার

যদি ব্যঞ্জনধ্বনির আগে থাকে, তবে রেফ ব্যবহার করতে হয়।

উদাহরণ: মর্ম, গর্ভ

 

. অনুস্বার () এর ব্যবহার

 

অনুস্বার সাধারণত ব্যঞ্জনবর্ণের আগে ব্যবহৃত হয়।

উদাহরণ: বাংলা, গঙ্গা, মঙ্গল

. যুক্তাক্ষর ব্যবহার

 

দুটি বা ততোধিক ব্যঞ্জনধ্বনি মিলে একত্রে একটি নতুন ধ্বনি তৈরি করলে যুক্তাক্ষর হয়।

উদাহরণ: শিক্ষা, দীক্ষা, শক্তি

 

১০. দীর্ঘ হ্রস্ব স্বরধ্বনি

 

স্বরবর্ণের দীর্ঘতা বা হ্রস্বতার ওপর ভিত্তি করে বানান ঠিক করতে হয়।

উদাহরণ:

ভুল: দির্ঘশুদ্ধ: দীর্ঘ

ভুল: ঊষাশুদ্ধ: ঊষা

 

১১. বিশেষ চিহ্নের ব্যবহার

 

হ্রস্ব -কার: এটি কিছু শব্দে বিশেষ অর্থ প্রকাশ করে।

উদাহরণ: বই, দই

দীর্ঘ -কার: অন্য শব্দের মধ্যে পার্থক্য করে।

উদাহরণ: শিক্ষা, দীক্ষা

 

১২. বিশেষ ধ্বনি পরিবর্তন

 

কিছু শব্দের উচ্চারণে ধ্বনি পরিবর্তিত হলেও বানান অপরিবর্তিত থাকে।

উদাহরণ:

ভুল: শিক্খাশুদ্ধ: শিক্ষা

ভুল: লক্খ্যশুদ্ধ: লক্ষ্য

 

১৩. ব্যঞ্জনবর্ণের পরে 'হসন্ত' ব্যবহার

 

যেসব ব্যঞ্জনবর্ণের উচ্চারণে স্বরবর্ণ যোগ হয় না, সেখানে হসন্ত চিহ্ন ব্যবহার করা হয়।

উদাহরণ: দণ্ড, ব্রহ্ম

১৪. হ্রস্ব দীর্ঘ -কারের ব্যবহার

 

এবংবর্ণের সঠিক প্রয়োগ করতে হবে।

উদাহরণ:

ভুল: বুধশুদ্ধ: বুধ

ভুল: ঊর্ধ্বশুদ্ধ: ঊর্ধ্ব

 

১৫. শব্দে অন্তঃস্থ 'য়' এর ব্যবহার

 

কিছু শব্দে 'য়' চিহ্ন ব্যবহার হয়।

উদাহরণ:

ভুল: মাধবশুদ্ধ: মাধ্যব

ভুল: ধ্রুবতারাশুদ্ধ: ধ্রুবতারা

 

১৬. স্বরবর্ণের লোপের নিয়ম

 

কিছু শব্দে স্বরবর্ণ উচ্চারণে বাদ পড়লেও বানানে থাকতে হবে।

উদাহরণ:

ভুল: হোস্টেলশুদ্ধ: হস্টেল

ভুল: প্লেনশুদ্ধ: বিমান

 

১৭. তদ্ভব শব্দের নিয়ম

 

তৎসম শব্দ থেকে পরিবর্তিত হয়ে তদ্ভব শব্দ তৈরি হয়। এগুলো উচ্চারণের ভিত্তিতে সহজ হয়।

উদাহরণ:

তৎসম: অগ্নিতদ্ভব: আগুন

তৎসম: মুকুটতদ্ভব: মুকুট

 

 

১৮. দেশি শব্দের নিয়ম

 

দেশি শব্দে সাধারণত উচ্চারণের মতো বানান করা হয়।

উদাহরণ:

ভুল: চান্দেশুদ্ধ: চাঁদে

ভুল: লেংটাশুদ্ধ: ল্যাংটা

 

১৯. বিদেশি শব্দের নিয়ম

 

বিদেশি শব্দগুলোর প্রচলিত রূপে বানান করা হয়।

উদাহরণ:

ভুল: আফিস শুদ্ধ: অফিস

ভুল: টেলিভিসন শুদ্ধ: টেলিভিশন

 

২০. ‘ণ’ এবং ‘ন’-এর ব্যবহার

কিছু শব্দে ‘ণ’ এবং কিছু শব্দে ‘ন’ ব্যবহার হয়।

উদাহরণ:

ভুল: জীবন → শুদ্ধ: জীবন

ভুল: কর্ণ → শুদ্ধ: কর্ণ




ক্যাডেট কলেজ ভর্তি পরীক্ষায় সফল হতে হলে বানান শিক্ষার প্রতি বিশেষ মনোযোগ দেওয়া জরুরি। শুদ্ধ বানান শুধু পরীক্ষার ভালো ফলাফলেই সহায়ক নয়, এটি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ জীবনের যোগাযোগ দক্ষতাও উন্নত করে। সঠিক বানান ভাষার সৌন্দর্য ও মর্যাদা অটুট রাখে এবং পরীক্ষার্থীদের ব্যক্তিত্বকে প্রভাবিত করে। তাই, প্রাথমিক স্তর থেকেই বানানের গুরুত্ব বুঝে নিয়মিত অনুশীলনের মাধ্যমে এই দক্ষতা অর্জন করতে হবে।